ঢাকা , শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫ , ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
ধর্ষণে আতঙ্ক -উদ্বেগ ভারতকে অযাচিত বিভ্রান্তিকর মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি রোধ করতে বলল ঢাকা প্রধান উপদেষ্টা চীন সফরে যাচ্ছেন ২৬ মার্চ সালমান এফ রহমানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা খরায় পুড়ছে চা-বাগান উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা ইফতারিতে দই-চিড়ার জাদু একরাতে দু’জনকে কুপিয়ে হত্যা এলাকায় আতঙ্ক স্বাভাবিক নিত্যপণ্যের বাজার, সংকট সয়াবিনে মামলা থেকে স্বামীর নাম বাদ দেয়ার কথা বলে স্ত্রীকে ধর্ষণ ছেঁউড়িয়ায় শুরু লালন স্মরণোৎসব দোহাজারীতে বাসচাপায় ৩ জন নিহত হেনস্তার পর ছাত্রীকে ফেলে দিলো দুর্বৃত্তরা ৫৬০ মডেল মসজিদ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ভ্যাট দেয় না বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরনের কাপড় টিভি ফ্রিজ খাট টাকা সব পুড়ে শেষ বস্তিতে আগুন ঢাকা মেডিকেলের আউটডোরে চিকিৎসা বন্ধ পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধির রেকর্ড ঠাকুরগাঁও হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া শিশু গাজীপুরে উদ্ধার মাগুরার সেই শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হাসিনাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

শিল্পীদের চাওয়া ফের জমে উঠুক ছবির হাট

  • আপলোড সময় : ১২-০৯-২০২৪ ০১:৩৬:৫৬ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১২-০৯-২০২৪ ০১:৩৬:৫৬ অপরাহ্ন
শিল্পীদের চাওয়া ফের জমে উঠুক ছবির হাট

নানা অজুহাতে বন্ধ করে দেয়ার পাঁয়তারা চলে। গুঁড়িয়েও দেয়া হয় শিল্পীদের এই আস্তানা। প্রতিবাদ হয়। আবার গুছিয়ে নতুন করে সম্মিলিত হন শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মীরা।
 

মোল্লার দোকান আর গাছের ছায়া। ইচ্ছেমতো যে কেউ শিল্পকর্ম ঝুলিয়ে দিতে পারতেন মুক্ত দেয়ালে। সকাল কিংবা সন্ধ্যা শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মীদের আড্ডা জমত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের বিপরীতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একটি ফটক ঘিরে ছিল এই ছোট্ট শিল্প আঙিনা, নাম-ছবির হাট।
বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে বন্ধ করে দেয়ার পাঁয়তারা চলে। গুঁড়িয়েও দেয়া হয় শিল্পীদের এই আস্তানা। প্রতিবাদ হয়। আবার গুছিয়ে নতুন করে সম্মিলিত হন শিল্পী-সংস্কৃতিকর্মীরা। তারপর নানা কারণে কয়েক বছর আগের মতো খুব একটা জমে উঠতে দেখা যায়নি। গত ১০ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন বাস্তবতায় হঠাৎ ভিড় জমে ছবির হাটে। শাহবাগ থানার হেফাজতে থাকা পরিত্যক্ত গাড়িগুলো হয়ে যায় ব্যাকড্রপ। তাতে আঁকা গ্রাফিতি। লম্বা সাদা কাপড়ে লেখা হয়, ‘আওয়াজ উডা, কথা ক- ছবির হাট’। প্রাণখোলা আড্ডায় ছবির হাট প্রাণ ফিরে পায়।
নব্বই দশকের শেষ। চারুকলা অনুষদে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের আড্ডা চলে। নানা কারণে সেখানে আড্ডা আর প্রাণবন্ত হচ্ছিল না! একদল শিক্ষার্থী ভাবলেন, আড্ডাটা চারুকলার বাইরে করলে কেমন হয়? মোল্লার দোকানের পাশে গাছের ছায়ায় শুরু। তাতে যোগ দেন চারুকলার বর্তমান-প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। ধীরে ধীরে নাটকের, গানের কিংবা পথচলতি মানুষ, চাকরিজীবী- সবারই আড্ডার জায়গা হয়ে ওঠে। যে শিল্পীদের হাতে শুরুটা হয়েছিল, তারা নিজেদের মজা করে ডাকতেন ‘হাতুড়ে’। এই সময়ে কথা বলতে গিয়ে অনুরোধ জানান, যেন নামের পরিবর্তে এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়। তেমনই একজন হাতুড়ে জানালেন শুরুর দিনের কথা।
‘চারুকলার উল্টো দিকে মোল্লার চায়ের দোকানে প্রতিদিন বিকেলে আড্ডা দিতাম। সেখানে মাথায় এল, আমরা যে ধরনের চিন্তাভাবনা করছি, এই চিন্তার একটা প্ল্যাটফর্ম থাকতে পারে। আমরা কোনো সংগঠন করব না কিন্তু সংগঠিত একটা প্ল্যাটফর্ম হলো। ছবির হাট কিন্তু প্রথাগত কোনো সংগঠন নয়। যে আসত সে-ই ছবির হাটের হয়ে যেত।’
শিল্পীদের হাত ধরে ছবির হাটের উত্থান হলেও এখানকার আড্ডায় মিলিত হতো নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাদের মধ্যে কেউ নাটকের, কেউ সংগীতের আবার কেউ সাংবাদিক। এর মধ্যে সপ্তাহের শুক্রবার এখানে ভিড় হতো সবচেয়ে বেশি।
ছবির হাটের এই পথচলা শুরু হয় ২০০০ সালের দিকে। তারপর থেকেই নানা শিল্পী-সংস্কৃতিসেবীর আড্ডার কেন্দ্রে পরিণত হয়। ছবির হাটের পথচলা শুরুর দিকের আরেক শিল্পী আশরাফুল কবির কনক। তিনি বলেন, ‘আমাদের সাপ্তাহিক একটা আড্ডা, রিক্রিয়েশনের জায়গা ছিল এটি। যেহেতু
হাটের আদলে করেছিলাম। তাই এখানে যে কেউ ছবি ঝুলিয়ে দিতে পারত। তার একটা দামও আপনি বলতে পারবেন। বার্গেনিং করতে পারবেন। এভাবে আড্ডার মধ্যেই শুরু ছবির হাট।’
আশরাফুল কবির জানান, বিভিন্ন উপলক্ষে এখানে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে রাজনৈতিক কোনো কার্যক্রমে সরাসরি অংশগ্রহণ করতেন না তারা। তাদের লক্ষ্য ছিল, এখানে সবার অংশগ্রহণ থাকবে। তবে বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে তারা সজাগ ছিলেন। কনক জানান, ধীরে ধীরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদকের আড্ডা বসে। ধর্ষণেরও খবর পাওয়া যায়। একপর্যায়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটক বন্ধ করে দেয়া হয়। আড্ডাও বন্ধ হয়ে যায়।
দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে আসা নাজির হোসেন বলেন, ‘আমি দেখলাম ছবির হাট নামের একটি প্ল্যাটফর্ম আছে। এখানে দেশের যে কেউ ছবি প্রদর্শনী করতে পারে। সেই ভাবনা নিয়ে বড় ভাইদের সঙ্গে দেখা করে এক বস্তা শিল্পকর্ম নিয়ে ঢাকায় আসি। তারপরে এখানে এসে অন্য শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলি। শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, পরিচালকদের মিলনমেলায় পরিণত হতো ছবির হাট।’ আবারও জমে উঠবে ছবির হাট-এই স্বপ্ন নাজিরের।
কনক বলেন, ‘আমরাও চাইনি কোনো কনস্ট্রাকশন এখানে হোক। দেয়াল যখন ছিল না, তখন আমরা গাছেও ছবি ঝুলিয়েছি। শুধু একটি স্টোররুমের দরকার ছিল, যাতে বৃষ্টি এলে ছবি না ভিজে। এখানে গ্যালারি, স্টোররুম তৈরি হচ্ছে। আপাতত কাজ বন্ধ। যে কোম্পানি কাজ করত, তারা পলাতক। কাজ শুরু হতে পারে। তাহলে আমরা আগের মতো আড্ডা শুরু করব।’
ঢাকার বাইরের অনেক শিল্পী আছেন, যারা ঢাকায় এলে ছবির হাটে চলে আসেন। কারণ, এখানে কাউকে না কাউকে পাওয়া যাবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স